Ans. মহাপদ্মনন্দ ছিলেন বিখ্যাত নন্দ বংশের প্রতিষ্ঠাতা। প্রায় বেশিরভাগ ঐতিহাসিকের মতে, তিনি ছিলেন নীচু বংশজাত তথা শূদ্র। তাঁর এই হীনজন্ম ঐতিহাসিক দিক থেকে তাৎপর্যপূর্ণ। এর দ্বারা প্রাচীন ভারতের চিরাচরিত ক্ষত্রিয়-প্রাধান্যের অবসান হয়। নন্দ বংশ 364 থেকে 324 খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত রাজত্ব করে। মহাপদ্মনন্দের মগধের সিংহাসন দখলের ঘটনাকে ড. রাধাকুমুদ মুখোপাধ্যায় ষষ্ঠ শতকে প্রতিবাদী ধর্ম আন্দোলনের মতো বিপ্লবাত্মক ও বিস্ময়কর দৃষ্টান্ত মনে করেছেন।
বৌদ্ধগ্রন্থে তাঁকে ‘উগ্রসেন’ অর্থাৎ বিশাল বাহিনীর সেনাপতি বলা হয়েছে। পুরাণ মতে, তিনি ইক্ষাকু, পাঞ্চাল, কলিঙ্গ, অস্মক, কাশী, কুরু, শূরসেন, মিথিলা প্রভৃতি রাজ্য ধ্বংস করে সমগ্র উত্তর ভারতে মগধের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেন। সম্ভবত দক্ষিণে গোদাবরী পর্যন্ত তাঁর আধিপত্য বিস্তৃত ছিল। মহাপদ্মের পূর্বে আর কোনো ভারতীয় নরপতি সাম্রাজ্যের অধীশ্বর হতে পারেননি। পুরাণে তাঁকে ‘একরাট’ বা ‘একচ্ছত্র সম্রাট’, ‘সর্বক্ষত্রান্তক’ বা সকল ক্ষত্রিয় রাজার উচ্ছেদকারী, ‘সর্বক্ষত্রিয়চ্ছেত্তা’ এবং ‘দ্বিতীয় পরশুরাম’ বলা হয়েছে। ড. রাধাকুমুদ মুখোপাধ্যায়-এর মতে, “মহাপদ্মনন্দ ছিলেন উত্তর ভারতের প্রথম ঐতিহাসিক সম্রাট”।